ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি:বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ। ভারতের সঙ্গে পণ্য আমদানি-রপ্তানিতে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে থাকে এই বন্দর। কিন্তু নানা অনিয়ম, দূর্নীতি, অব্যবস্থাপনা, অদক্ষতা, প্রতিশ্রুত অবকাঠামোর অভাব এবং মালিকানা বিষয়ক দ্বন্দ্বে বন্দরের কার্যক্রম প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে। ফলে গুরুত্বপূর্ণ এই বন্দর আমদানি-রপ্তানিতে তেমন কোনো ভূমিকা রাখতে পারছে না। সরকার বঞ্চিত হচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে। দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর হলেও এটি এখন সরকারের জন্য গলার কাঁটা হয়ে ওঠেছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার ভারত সীমান্তে চালু হয় সোনামসজিদ স্থলবন্দর। নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে ২০০৬ সালে শুরু হয় বন্দরের কার্যক্রম। পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশীপ-পিপিপি’র ভিত্তিতে পানামা সোনামসজিদ পোর্ট লিংক লিমিটেডকে বন্দরটির বেসরকারি অপারেটর নিয়োগ করা হয়।
পানাামা সোনামসজিদ পোর্ট লিংক কোম্পানি দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই শুরু হয় নানা অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা। ২০০৮ সালের ৭ জুলাই পানামা বোর্ড অব ডিরেক্টরস মিটিংয়ে তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বোর্ডের পরিচালক পদ থেকে মো. মনিরুজ্জামান চৌধুরী পদত্যাগ করেন। বোর্ড তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে মো. সাদেকুল ইসলাম চৌধুরীকে ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে অনুমোদন দেয়। এ সময় ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিরুজ্জামান তার শেয়ারও (৩৪ শতাংশ) বিক্রি করে দেন সাদেকুল ইসলাম চৌধুরীর কাছে। এ অবস্থায় কারসাজি করে ওই কোম্পানির ৮৫ শতাংশ শেয়ার বিক্রির জন্য মেজর অব. জাহাঙ্গীরের (মৃত) সঙ্গে ৩০/১১/২০০৯ তারিখে একটি চুক্তি করেন। কিন্তু সে সময় মনিরুজ্জামান চৌধুরী ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন না। সুতরাং চুক্তিটি ছিল অবৈধ, শেয়ার ক্রয়-বিক্রয়ও ছিল অবৈধ। এদিকে ওই চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যায় ২০১২ সালে। এই মেয়াদের মধ্যে স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের অনুমতি ছাড়াই ৪২ শতাংশ শেয়ার অবৈধভাবে হাতবদল হয়েছে। বাকি ৪৩ শতাংশ শেয়ার ট্রান্সফার হয় চুক্তিপত্রে উল্লিখিত মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরে। ফলে এই শেয়ারেরও বৈধতা চলে যায় দুটি কারণে। প্রথমত মেয়াদোত্তীর্ণ চুক্তি, দ্বিতীয়ত ওই শেয়ার আগেই আরেকজনের কাছে বিক্রি করা হয়েছিল।
এ অবস্থায় বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের দপ্তর থেকে ওই শেয়ার ট্রান্সফার অবৈধ ঘোষণা করে আদেশ দেয়া হয় (স্মারক নম্বর: বাস্থবক/প্রকৌ/ সোনামসজিদ/১২২ ডলি-৫/০৫ (পোর্ট-১) ৮৬/১, এবং বাস্থবক/প্রকৌ/ সোনামসজিদ/ ১২২, ভলি-৫/ ০৫ (পোর্ট-১) ৮৬/২। উক্ত আদেশে স্বাক্ষর করেন বাংলাদেশ স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষের তৎকালীন চেয়ারম্যান মো. ময়েজউদ্দিন আহমেদ। উক্ত অবৈধ শেয়ার বাতিল করতে রেজিস্ট্রার, জয়েন্ট স্টক কেম্পানিকে চিঠি দেয়া হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে বর্তমানে যারা বন্দর পরিচালনা করছেন তাদের নামে বরাদ্দকৃত ৪৩ শতাংশ শেয়ারের কোনো ভিত্তি নেই। কারণ পুরো শেয়ার (১০০ শতাংশ) ইডকল নামক ঋনদানকারী প্রতিষ্ঠানে বন্ধক রেখে ১৪ কোটি টাকা ঋণ গ্রহণ করা হয়েছিল। অথচ ইডকল এবং স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া ৪২ শতাংশ শেয়ার জাহাঙ্গীর গং এর অনুকূলে ট্রান্সফার করা হয়েছিল। ফলে বর্তমান ম্যাজেমেন্ট অবৈধভাবে বন্দর পরিচালনা করছে।
এছাড়া, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের (স্মারক নম্বর- ১২০, তারিখ ১৩/০৫/২০১০) উপ সচিব (বন্দর) নাসির আরিফ মাহমুদ স্বাক্ষরিত আদেশ অনুযায়ী ব্যবস্থাপক কোনো শেয়ার ট্রান্সফারের অনুমতি দিতে পারেন না। কারণ, তখন মন্ত্রণালয় যে তিনটি শর্তে শেয়ার ট্রান্সফারের অনুমতি দিয়েছিল প্রয়াত জাহাঙ্গীর গং প্রতিটি শর্ত পালনে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের আদেশে বন্দরের কার্যক্রম থেকে তাদেরকে অব্যাহতি (টার্মিনেশন) দেয়া হয়েছিল, যদিও পরে সেটি অজ্ঞাত কারণে প্রত্যাহার করা হয়।
তবে বর্তমান বন্দর পরিচালনাকারীদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করা হয়েছিল তার সবগুলো এখনো বিদ্যমান। বন্দর কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অবজ্ঞা করে তারা তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। অথচ চুক্তি অনুযায়ী ২০১৪ সালের মধ্যে যেসব উন্নয়ন কাজ শেষ করার কথা ছিল তা বাস্তবায়িত হয়নি এখনো।
এদিকে অবৈধভাবে দায়িত্ব পালন করা মেজর অব. জাহাঙ্গীর ২০১৯ সালের ৬ জানুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন। তার কন্যা জোহরা নরশাবা বর্তমানে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন, যদিও তার শেয়ারের পরিমান তখন ছিল মাত্র ১ শতাংশ; সেটিও বাংলাদেশ স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষের মতে অবৈধ। অন্যদিকে মো. সাদেকুল ইসলাম চৌধুরী, যিনি ১৫ শতাংশ শেয়ারের মালিক এবং পরে তিনি আরো ৩৪ শতাংশ শেয়ার মো. মনিরুজ্জামান চৌধুরীর নিকট থেকে ক্রয় করেন (ওই ৩৪ শতাংশ শেয়ার জয়েনস্টক কোম্পানি থেকে এখনো অনুমোদন পায়নি, শুধু পানামা বোর্ড অব ডাইরেক্টর কর্তৃক অনুমোদিত)।
এরকম পরিস্থিতিতে বন্দরে অচলাবস্থা নিরসনে ১০/১১/২০০৯ তারিখে মেজর অব. মো. জাহাঙ্গীরকে ডেজিনি/ প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। কিন্তু স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি অনুয়ায়ী চার বছরের মধ্যে অবকাঠামো নির্মাণের কথা থাকলেও গত ১৪ বছরে ৫০ শতাংশ কাজও বাস্তবায়িত হয়নি।
অভিযোগ রয়েছে বর্তমান অপারেটর ১৯৯৪ সালের কোম্পানি আইন লংঘন করে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং অপারেটরের মধ্যে সম্পাদত চুক্তি অনুসারে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ করতে ব্যর্থ হওয়ায় গুড়ো দুধ, কাগজ, ফেব্রিক্সসহ আরো কিছু পণ্য এই বন্দর দিয়ে আমদানির অনুমতি দিচ্ছেনা জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। এতে করে সরকার বিপুল পরিমান রাজস্ব হারাচ্ছে। ফলশ্রুতিতে সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
সম্ভবনাময় এ স্থলবন্দর দিয়ে সারা বছরই ফল, কয়লা, পাথর, মসলা ও কৃষি পন্য আমদানী হয়ে থাকে। উল্লেখযোগ্য কৃষিপণ্যের মধ্যে রয়েছে ফলমুল,গম, ভূট্টা, মসলা, পেঁয়াজ, আলু ইত্যাদি। সিমেন্ট তৈরীতে ব্যবহৃত ছাই এই বন্দর দিয়ে আসে।
অভিযোগ রয়েছে বাজারের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি হচ্ছে না। নির্দিষ্ট সময়ে বেতন পাচ্ছেন না তারা। এছাড়া পদোন্নতি না হওয়া, অব্যবস্থাপনা, পদে পদে হয়রানি সহ নানা অভিযোগে দিন দিন কমে আসছে বন্দরের আমদানি। সিএনএফ এজেন্টসহ বন্দর ব্যবহারকারীরা পানামা পোর্ট লিংক কর্তৃপক্ষের ওপর বেজায় নাখোস। তারা রাজস্ববৃদ্ধি এবং ব্যবসায়ের স্বার্থে অতি দ্রুত সরকার কর্তৃক প্রশাসক নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন।
এর আগে নানাবিধ অভিযোগ এনে বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চুক্তি বাতিলের জন্য ২০১১ সালে প্রধানমন্ত্রী বরাবর আবেদন করেছিলেন বন্দর-সংশ্লিষ্ট সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন নেতৃবৃন্দ। সোনামসজিদ সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক সাদিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত ওই আবেদনে পানামা পোর্ট লিং কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মোট ১২টি অভিযোগ তুলে ধরা হয়। সোনামসজিদ স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের তৎকালীন সভাপতি আখেরুল ইসলাম জানান, পানামা বন্দর কর্তৃপক্ষের নানা অব্যবস্থাপনার বিষয়ে লিখিত অভিযোগসহ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দপ্তরে অলিখিতভাবেও বলা হয়েছে। কিন্তু বন্দর কর্তৃপক্ষ সেসব বিষয়ে কার্যকর ভূমিকা নেয়নি। উপরন্তু তারা প্রতি বছরই বন্দরের চার্জ বাড়িয়ে চলেছে। বাংলাদেশ স্থল শুল্ক বন্দর কর্তৃপক্ষ বিওটি পদ্ধতিতে ২০০৬ সালের ২৭ নভেম্বর থেকে সোনামসজিদ স্থল শুল্ক বন্দরে পারশিয়াল কমার্শিয়াল অপারেশন শুরুর মাধ্যমে পানামা সোনামসজিদ পোর্ট লিংক লিমিটেড কম্পানি ২৫ বছরের চুক্তি অনুযায়ী বন্দরটি চালু করে। এত দিনেও পূর্ণাঙ্গ বন্দরের অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা দিতে পারেনি পানামা কর্তৃপক্ষ। অথচ অবকাঠামো উন্নয়নের নামে তারা প্রতি বছর পাঁচ ভাগ হারে মাসুল বৃদ্ধি করে চলেছে। পানামা সোনামসজিদ পোর্ট লিংক লিমিটেডের ম্যানেজার বেলাল হোসেন বন্দর কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনার কথা অস্বীকার করে বলেন, স্থল শুল্ক বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে করা ২৫ বছরের চুক্তি অনুযায়ী আমরা কাজ করে যাচ্ছি। সে মোতাবেক বন্দরের অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা হচ্ছে এবং আগামী কয়েক বছরের মধ্যে আরো বেশ কিছু কাজ করা হবে।
এদিকে বন্দরের কার্যক্রম নিয়ে ভয়াবহ অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ১ মে, ২০২৪ এক শ্রমিক সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরী থেকে বঞ্চিত করবে তারা যত ক্ষমতাবানই হোক না কেন তাদের ছাড় দেয়া হবে না। অথচ পানামা কর্তৃপক্ষ ব্যাপক পুকুরচুরি করছে শ্রমিকদের মজুরী নিয়ে। সরকার নির্ধারিত মজুরী প্রতি টনে ৬৯.৬৯ টাকা। অথচ শ্রমিকদের দেয়া হচ্ছে মাত্র ১৪ টাকা। একটি সিন্ডিকেট শ্রমিকদের ঠকাচ্ছে।
আরেকটি গুরুতর অভিযোগ হচ্ছে, আমদানি করা পণ্যের যে মাসুল আদায় করা হয় তার একটি অংশ সরকারি কোষাগারে জমা হয়, বিরাট অংশ চলে যায় পানামা কর্তৃপক্ষ এবং সিন্ডিকেটের হাতে। প্রতিটি ঠিকাদার হতে ভ্যাট এবং এআইটি ৮ শতাংশ হারে কেটে নিলেও পানামা কর্তৃপক্ষ আত্মসাৎ করে। কাউন্টারে ভারতীয় মুদ্রা বিনিময়ের সময়ও তারা বেশি টাকা কেটে রাখে। আবার ওই রুপি বেশি দামি অবৈধভাবে বাইরে বিক্রি করে থাকে।
স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তির কোনো তোয়াক্কা না করে নিজেদের ইচ্ছামতো বন্দর পরিচালিত হচ্ছে। বন্দরে প্রাথমিক চিকিৎসা এবং ওষুধের ব্যবস্থা নেই। নেই কোল্ড স্টোরেজ এবং চুক্তি অনুযায়ী গোডাউন। প্রতিশ্রুত পানি নিষ্কাষন এবং নিজস্ব বিদ্যুত ব্যবস্থা নেই।
আরো অভিযোগ রয়েছে, পানামার জিএম বেলাল হোসেন এর নেতৃত্বে ৪/৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর একটি সিন্ডিকেট দূর্নীতিতে জড়িত। পানামা মালিক পক্ষ এ বিষয়ে অন্ধকারে আছেন, তাকে বিষয়টি জানানো হয় না। ওই সিন্ডিকেটে আরো যাদের নাম পাওয়া গেছে তারা হলেন টিপু সুলতান, পোর্ট ম্যানেজার মাইনুল ইসলাম, প্রশাসন বিভাগের রিপন, সুমন (হিসাব রক্ষক) ও আশরাফ।
এ বিষয়ে সিএনএফ সভাপতি হারুনুর রশিদ বলেন, ট্যাক্স ভ্যালু আছে এমন পন্য নিয়ে এই বন্দর দিয়ে গাড়িই ঢুকতে পারে না। আমদানি-রপ্তানির জন্য প্রায় ৪০০ গাড়ি এই বন্দরে রয়েছে। এর মধ্যে ৩০০ এর বেশি গাড়ি পাথর বহন করে। এই বন্দরটি মূলত ফল আমদানি-রপ্তানির জন্য প্রথম শুরু হয়েছে। এখন এখান দিয়ে কোনো ফল আমদানি হয় না। ভারী পন্য নামানো-উঠানোর জন্য কোনো ক্রেইন নেই। ফলে সরকার মোটা অঙ্কের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বন্দরটি ফল আমদানির জন্য যথেষ্ট উপযোগী, কিন্তু বন্ধ।
তিনি আরো বলেন, আমরা কয়েকবার রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মহোদয়ের কাছে অভিযোগ করেছি, দাবি করে করেছি এসব বিষয়। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, কিন্তু কার্যকর হয়নি আজও। আমরা বলেছি, সব বন্দরে সমান সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হোক, কিন্তু পাচ্ছি না। পচনশীল পণ্য আমদানিতে ১০% কর মৌকুফের বিধান রয়েছে। সেটি এই বন্দরে কার্যকর নেই। পেঁয়াজ, রসুন, আদা এখান দিয়ে আমদানি হয় না। এজন্য বাজারে এসব পণ্যের দাম বেশি। এসব চালু করতে হবে। নাহয় ধীরে ধীরে আরো পিছিয়ে পড়বে এই বন্দরের কার্যক্রম।
পানামা পোর্ট ম্যানেজার মাইনুল ইসলাম বলেন, ডলার সংকটের কারণে কিছুদিন আমদানি-রপ্তানি কম হয়েছে, তবে এখন আবার স্বাভাবিক হয়েছে। অবকাঠামোগত উন্নয়ন পর্যাপ্ত নেই, কথা ভিত্তিহীন। কিছুদিন আগে কেন্দ্র থেকে এই পোর্টে অডিট হয়েছে। এখন সবকিছু ঠিকঠাক। ১৯ একর জমির জমির ওপর ৩টি বিশাল গোডাউন রয়েছে। মালামাল তেমন না থাকায় সেগুলোই ব্যবহার হচ্ছে না। কোল্ডস্টোরেজ রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ফল আমদানি প্রায় ২ বছর যাবত বন্ধ রয়েছে। আমদানিকারকরা এই বন্দর ব্যবহার করছেন না। চাইলে যেকোনা সময় তারা ফল আমদানি করতে পারেন। এই ব্যাপারে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। সমস্যা যা রয়েছে, সেগুলো সমাধান হচ্ছে। আমরা কাস্টমসে কথা বলেছি।
স্থলবন্দর পরিচালক (ট্রাফিক) ড. হারুন অর রশিদ বলেন, অভিযোগের সব বিষয়ে তদন্ত হচ্ছে। তদন্ত পরিচালনা করছে ল্যান্ডপোর্ট অথরিটি। তদন্তে জানা যাবে মূলত এসব সমস্যা কেন হচ্ছে। সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে কেন আমদানি-রপ্তানি কমেছে, এটা এখন বলা যাচ্ছে না।
Leave a Reply